।।শাহজাদা চান্দ মিয়া।।
আজ ৬ই রজব, আওলাদে রাসুল,খাজায়ে খাজেগান, রাজায়ে হিন্দুস্থান,খাজা গরীবে নেওয়াজ (রহ:)’র ওরশ মোবারক।
খাজা গরিবে নেওয়াজ রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, আতায়ে রসূল, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল হজরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৩৬ হিজরী মতান্তরে ৫৩৭ হিজরী তবে বিশুদ্ধ মতে- ৫৩৬ হিজরীর ১৪ই রজব সোমবার দিন বিলাদত শরীফ লাভ করেন এবং
৬৩৩ হিজরী মতান্তরে ৬৩৪ হিজরী মুতাবিক ৬ই রজব সোমবার বিছাল শরীফ লাভ করেন । হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি- এর পিতার নাম মুবারক হযরত খাজা সাইয়্যিদ গিয়াসুদ্দীন আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং মাতার নাম মুবারক হযরত
সাইয়্যিদা উম্মুল ওয়ারা রহমতুল্লাহি আলাইহা । হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পিতৃ ও মাতৃ দু’টি কুলই ছিল কুরাইশ গোত্রের শ্রেষ্ঠ শাখা সাইয়্যিদ বংশদ্ভূত। অর্থাৎ পিতা ও মাতা উভয়ের দিক দিয়ে হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুযোগ্য উত্তরাধিকারী বা আওলাদ। উনার বয়স মুবারক যখন ১৫ বৎসর, তখনই উনার পিতা-মাতা উনারা উভয়ে বিছাল শরীফ লাভ করেন। পিতা-মাতা উনারা উভয়ে যমীন থেকে বিদায়ের পর তিনি ওয়ারিশ সূত্রে শুধুমাত্র একটি যাঁতি ও একটি আঙ্গুর ফলের বাগান লাভ করেন। কিতাবে উল্লেখ করা হয়, সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত উক্ত বাগানে কাজ করছিলেন; এমন সময় উক্ত বাগানে তাশরীফ আনলেন, মজ্জুব ওলী, হযরত ইবরাহীম কান্দুজী রহমতুল্লাহি আলাইহি। গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেহেতু মাদারজাদ ওলী ছিলেন, তাই উনার অন্তরে ওলীআল্লাহ উনাদের প্রতি ছিল অফুরন্ত ভক্তি ও মুহব্বত। তিনি হযরত ইবরাহীম কান্দুজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমতে কিছু আঙ্গুর ফল পেশ করলেন।
পক্ষান্তরে হযরত ইবরাহীম কান্দুজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থলি থেকে কিছু খাদ্য বের করে চিবিয়ে গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে খেতে দিলেন।
গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত খাদ্য খাওয়ার পর উনার মধ্যে ভাবান্তর (হাল) সৃষ্টি হয়ে যায়।যার ফলে তিনি একমাত্র সম্পদ যাঁতি ও বাগান বিক্রি করে দিয়ে ইলমে দ্বীন অর্জন করার জন্য সফরে বের হয়ে যান।
প্রথমে বুখারা গিয়ে সাড়ে সাত বৎসর ইলমে ফিক্বাহতে পূর্ণ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। অতঃপর ইলমে তাছাউফ অর্জন করার লক্ষ্যে শায়খ তথা পীর ছাহেব তথা মুর্শিদ ক্বিবলা তালাশ করতে লাগলেন এবং তৎকালীন যামানার শ্রেষ্ঠ ও বিশিষ্ট বুযূর্গ ও ওলীআল্লাহ হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত হয়ে প্রায় সাড়ে বিশ বৎসর কঠোর রিয়াযত-মাশাক্কাত ও মুরাক্বাবা-মুশাহাদার মাধ্যমে ইলমে তাছাউফে পূর্ণতা হাছিল করেন।
এর পূর্বে উনার শায়খ হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “হে মুঈনুদ্দীন! চলুন, আপনাকে আল্লাহ পাক ও হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট সোপর্দ করে দিব।” একথা বলে হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে নিয়ে হজ্জে রওয়ানা হয়ে গেলেন।
হজ্জ সমাপন করে অর্থাৎ কা’বা শরীফ যিয়ারত করার পর হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “হে আল্লাহ পাক! মুঈনুদ্দীনকে আপনার নিকট সোপর্দ করে দিলাম, আপনি উনাকে কবুল করুন।” গায়েব থেকে আওয়াজ আসল- “হে উছমান হারূনী! আমি আল্লাহ পাক, মুঈনুদ্দীন উনাকে কবুল করে নিলাম।